আমাদের একমত হওয়া দরকার যে, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বহু জাতির একটি কনফেডারেশন। একই সাথে ‘বাংলাদেশি’ নামে একটি নিছক ভৌগোলিক অর্থে সাধারণ ‘জাতি’ আছে, যা আমরা ‘ন্যাশনাল পার্লামেন্ট’, ‘ন্যাশনাল ইলেকশন’, ‘ন্যাশনাল আর্কাইভ’, ‘পাসপোর্ট’ ইত্যাদি শব্দে সহজেই পাই এবং বুঝতে পারি। এই সাধারণ জাতির ধারণা এবং ‘বাঙালি’, ‘মুসলমান বাঙালি’, ‘হিন্দু বাঙালি’, ‘চাকমা’, ‘মান্দি’, ‘শাওতাল’, ‘টিপরা’, ‘রাখাইন’ ইত্যাদি জাতির ধারণা এবং এগুলোর ভিন্ন ভিন্ন সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো বিরোধ-ঝগড়া-ফ্যাসাদ নেই; বরং একটি আরেকটিকে পূর্ণ করে। ভৌগোলিক অর্থে সাধারণ জাতি দেশের সকল জাতির শান্তিচুক্তির মাধ্যমে একটি একক অর্থনৈতিক সত্তা তৈরি করছে। যেমন ঘটে একটি কোম্পানির ক্ষেত্রে: কয়েকজন ব্যক্তি মিলে একটি কোম্পানি বানায়, যা ঐ ব্যক্তিদের আইনি অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পন্ন, ঐ ব্যক্তিদের সমান আরেকটি সত্তা – একটি অর্থনৈতিক ইউনিট, যার সাথে ঐ ব্যক্তিদের কোনো বিরোধ নেই, বরং উল্টো, ঐ কোম্পানির মাধ্যমে ঐ ব্যক্তিদের ইউনিটি বা একতার শক্তি অনুভূত হতে পারে।
একটি সুখী বাংলাদেশ গড়তে আমাদের শুরুতে একটি শান্তির বাংলাদেশ বানাতে হবে। এবং শান্তির শর্ত হলো ইনসাফ; বহু জাতি, মত, পথ, ধর্ম, দর্শনের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি না হলে দেশে শান্তি কায়েম হবে না, ফলে ইনসাফের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারবে না, ফলে সুখী বাংলাদেশ পাওয়াও অসম্ভব থেকে যাবে।
ঐ শান্তিচুক্তিরই আরেক নাম ডেমোক্রেটিক রেভল্যুশন। অন্য যে কোনো রকমের রেভল্যুশন শক্তিমানের শাসন কায়েম করে; সেই শক্তিমান বহু রূপে হাজির হতে পারে: এখনকার বাকশালী তালুকদারি-মাফিয়া শাসন তারই একটি, আরও কয়েকটা রূপ হতে পারে বাঙালি ন্যাশনালিজম, মুসলমান বাঙালি, হিন্দু বাঙালি, মার্ক্সের অনুসারী। ডেমোক্রেটিক রেভল্যুশন মানে ঐ সব শক্তিমানের শাসনের বদলে একটি শান্তিচুক্তির মাধ্যমে সকলের, জনতার সকল অংশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইনসাফ কায়েম করা।
এমন একটি ডেমোক্রেটিক রেভল্যুশন বহাল তবিয়তে রাখতে এবং সেই রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ইতিহাসের কোনো এক সময়ে সুখী বাংলাদেশ গড়তে ইতিহাসের এই মুহূর্তে অন্তত ৩টি বিষয়ে আমাদের একমত হওয়া দরকার, এবং একটি আপৎকালীন চুক্তি করে ওয়াদা রাখার শপথ নিতে হবে আমাদের। ৩টি বিষয় এমন:
ক. নির্বাচন এবং একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার হস্তান্তর।
খ. ব্যক্তি মালিকানা। এই ব্যক্তি মালিকানার অর্থ এমন নয় যে, নিছক ৫% দেশের সব কিছুর মালিক হবে, বাকি ৯৫% নাগরিক কোনো কিছুর মালিক থাকবে না; বরং এই ব্যক্তি মালিকানার অর্থ হলো, ১০০% নাগরিকই মালিক হবে। বাংলাদেশের মোট জমিকে ২০ কোটি ভাগ করলে প্রায় ৮০০ স্কয়ার মিটার জমি পড়ে প্রতিটা ভাগে; তাই সকল নাগরিকের মাথাপিছু অন্তত ২০ শতক জমি থাকা খুবই সম্ভব।
গ. মুক্ত বিবেক। নাগরিকদের বিবেকের চারপাশে রাষ্ট্র কোনো সীমানা দিতে পারবে না, মানুষের চিন্তা এবং কথা কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থাকার ব্যাপার না। রাষ্ট্রের সকল কর্মী, নির্বাচিত প্রতিনিধি, সরকার আদতে জনতার খাদেম, এই খাদেমদের কাজকর্ম তদারক করার অধিকার আছে জনতার বা নাগরিকদের; নাগরিকদের বিবেক মুক্ত না থাকলে ঐ তদারকি অসম্ভব, রাষ্ট্রের যে কোনো ব্যাপারে কথা বলতে পারবে নাগরিকরা, এটা নাগরিকদের অধিকার এবং দায়িত্ব। খোদ রাষ্ট্রই বানিয়েছে নাগরিকদের বিবেক, তাই নাগরিকদের বিবেক বন্দী করতে পারে না রাষ্ট্র।
সুখ শান্তি পার্টির ইশতেহার [আমি রকম শা ওরফে রক মনু ওরফে এস এম রেজাউল করিম বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক রেভল্যুশনের পরে একটা পলিটিক্যাল পার্টি বানাতে চাই। এখন রাজনীতির উপর বাস্তবে ব্যান চলছে; গত কয়েক বছরে দুয়েকটা পার্টি তৈরি হতে দেশে, ঐগুলোকে দখলদার বাতিল গভমেন্ট হতে দেবার কারণ হলো, যাতে অলরেডি জনতার ভিতর যেই পার্টির মস্ত ভিত্তি আছে, সেই বিএনপিকে দুর্বল করা। তাই ঐ নয়া পার্টিগুলো বাকশালী দখলদারের এজেন্ডা মোতাবেক ‘কিংস পার্টি’র পার্টে অভিনয় করছে মাত্র।
এখন ডেমোক্রেটিক রেভল্যুশনের জন্য বাংলাদেশের জনতাকে উপরে লেখা ৩ দফায় চুক্তি করার দাওয়াত দিচ্ছি আমি। এর সাথে আগামীতে আমি যেই পলিটিক্যাল পার্টি গড়তে চাই, তার ইশতেহারের খসড়া পেশ করছি জনতার দরবারে। এই ইশতেহারের মর্মের সাথে যারা একমত হবেন, তেমন লোকদের নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঘষামাজা করে এই ইশতেহার ফাইনাল করা যাবে। তবে যে কোনো ইশতেহার, এমনকি দেশের কন্সটিটিউশনও খসড়া হিসেবে ভাবাই ভালো; কেননা, নয়া জামানা হাজির হয়, নয়া মানুষ-নাগরিক হাজির হয় কালে, তাই কোনো এক জামানায় বানানো মানুষের যে কোনো ডকুমেন্ট আপডেট করার দরকার পড়ে। কেননা, মানুষের জন্যই এই সকল ডকুমেন্ট, এমনকি রাষ্ট্র, ডকুমেন্টের জন্য মানুষ-নাগরিক না।]
কবুলিয়তের শাসন
শাসনের ভিত্তি হতে হবে জনতার কবুলিয়ত। জনতা কবুল করে নাই, তেমন কেউ শাসনের কোনো পোস্টে থাকতে পারবে না। যেই শাসক জনতার বায়াত [ভোট] না পাবে, সে শাসক হতে পারবে না এবং জনতা যে কোনো সময় তাদের ভোট তুলে নিতে পারবে। শাসকের যে কোনো পোস্ট থেকে যে কাউকে নামানোর ক্ষমতা থাকতে হবে জনতার হাতে।
জনতার এই পাওয়ার কোনো শাসক যেন মূলতবি করতে না পারে, সেই সিস্টেম বানাতে হবে এবং সেটা বানাতে হলে রাষ্ট্রের মুসাবিদা থেকে শাসনের পুরো সিস্টেম নতুন করে বানাতে হবে। নতুন সিস্টেমের নকশার মুসাবিদা পেশ করলাম আমরা:
ক. রাষ্ট্রের একদম উপরে দুইটি পোস্ট থাকবে, প্রেসিডেন্ট এবং উজিরে আজম। প্রেসিডেন্ট হবেন সারা দেশের ভোটারদের ডাইরেক্ট ভোটে। উজিরে আজম হইবেন ৩০০ এমপির ভোটে, যেই এমপিরা ইলেক্টেড হইবেন জনতার ডাইরেক্ট ভোটে।
দেশের দপ্তরগুলো প্রেসিডেন্ট এবং উজিরে আজমের হাতে ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট ইলেকশন একই দিনে হবে, দুইটি ব্যালট নিয়ে ভোটের বুথে ঢুকবেন ভোটাররা।
খ. সকল শহরে ১ জন ইলেক্টেড মেয়র থাকবে। এবং প্রতি ১০০০ ভোটারের বিপরীতে ১ জন কমিশনার ইলেক্টেড হবেন। শহরের পুলিশ থাকবে মেয়রের হাতে, শহরবাসীর খাজনার পয়সায় মেয়র এবং পুলিশ বা শহরের সকল পাবলিক খাদেমের বেতন দেওয়া হবে। প্রতি ১০০০ ভোটারের বিপরীতে ১ জন পুলিশ থাকবে।
একটা উপজেলায় ১টা শহর এবং মেয়র থাকবে, উপজেলার বাকি এলাকা ইউনিয়নে ভাগ করা থাকবে। ইউনিয়নগুলোতে ইলেকশনের মাধ্যমে ১ জন মেয়র এবং প্রতি ১০০০ ভোটারের বিপরীতে ১ জন কমিশনার ইলেক্টেড হবে।
প্রতি মহকুমায় একজন ইলেক্টেড শরিফ হবেন। এই শরিফ হবেন ১ জন মেয়ে। তার দপ্তর হবে উপজেলার সেন্টারে। তিনি মহকুমার সালিশি করবেন এবং দেশের জমিজমার সকল হাতবদল/রেজিস্ট্রির কাজ মহকুমার দপ্তরে চলবে। তার হাতে থাকবে উপজেলা পুলিশ, প্রতি ১ হাজার ভোটারের বিপরীতে ১ জন পুলিশ থাকবেন শরিফের দপ্তরে। ছেলে এবং মেয়ে ভোটারের অনুপাতে পুলিশ থাকবে। তার বাইরে ১ জন হিজড়া পুলিশ থাকবে। উপজেলায় হিজড়া পাওয়া না গেলে পোস্ট খালি থাকবে।
দেশে ৬৪ জেলা থাকবে, জেলাগুলো ৫টা মহকুমায় ভাগ করা থাকবে। ৫ মহকুমার সকল মেয়র, শরিফ, কমিশনারের ১টা করে ভোট থাকবে, সেই ভোটে জেলায় ১ জন হাকিম ইলেক্টেড হবেন। হাকিমের দপ্তর থাকবে জেলার সেন্টারে। জেলা-মহকুমার ৪টা কোণা থেকে কোনাকুনি ২টা লাইন টানলে সেই লাইন দুইটি যেই বিন্দুতে ছেদ করবে, সেই বিন্দুটাই হবে জেলা-মহকুমার সেন্টার। হাকিমের দপ্তরে সালিশি-সিস্টেমে জেলার নাগরিকদের ফ্যাসাদের ফয়সালা হবে। এই ফয়সালার ব্যাপারে জেলা আদালতে আপিল করা যাবে। হাকিমের হাতে ৫ জন পুলিশ থাকবে, সেই পুলিশের কাছে নিছক হাতকড়া এবং ইলেকট্রিক শকার থাকবে।
জেলার মহকুমা, সিটি, ইউনিয়নের আয় হবে নাগরিকদের খাজনা, জমির হাতবদলের ফিসের ৫০%, ট্রেড লাইসেন্স এবং গাড়িঘোড়ার লাইসেন্স ফিস থেকে।
গ. প্রতি জেলায় একটা আদালত থাকবে। এই আদালত হবে হাকিমের দপ্তরের পাশে। সেন্টারে আরও থাকবে জেলা কারাগার। আদালত এবং কারাগারের সিকিউরিটির দায়িত্ব থাকবে ফেডারেল পুলিশের হাতে। জেলায় ফেডারেল পুলিশের আর কোনো এখতিয়ার থাকবে না।
আদালতে জজ থাকবেন ১ জন এবং ৭ জন জুরি থাকবেন। এই জুরি বোর্ড বানাবার এখতিয়ার থাকবে হাকিমের হাতে। মামলার আসামির আবদারের ভিত্তিতে জুরি বোর্ড থাকা বা না থাকা নির্ভর করবে – আসামি চাইলে হাকিম জুরি বোর্ড বানিয়ে দেবেন, না চাইলে থাকবে না।
ঘ. পাবলিক হাসপাতালগুলো মেডিকেল কলেজগুলোর আওতায় ভাগ করা হবে। পাবলিক ভার্সিটিগুলোর ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট মেডিকেল কলেজ/ভার্সিটির আওতায় চলে যাবে, জেনারেল ভার্সিটিতে থাকবে জেনেটিক্স এবং বায়োকেমিস্ট্রি। মেডিকেল কলেজ/ভার্সিটির ডাক্তার আর ফার্মাসিস্টদের মধ্যে ইলেকশনের মাধ্যমে ১১ জনের দুইটি কমিশন বানানো হবে। এই দুই কমিশনের হাতে এখতিয়ার থাকবে ফার্মা কোম্পানি এবং প্রাইভেট হাসপাতালগুলো দেখাভাল করার।
ঙ. পাবলিক কলেজে ব্যাচেলর প্রোগ্রাম থাকবে না। ইন্টারমিডিয়েটের পরে পেশাদারি ডিপ্লোমা দিতে পারবে তারা, ১ বছরের ডিপ্লোমা হবে সেটা; এই ডিপ্লোমার কোর্স ভার্সিটিগুলোর ডিসিপ্লিনের সাথে খাপ খাবে, এই ডিপ্লোমাহোল্ডাররা ভার্সিটির ব্যাচেলরে ১ বছর পার করেছে বলে ধরা হবে। একই ফর্মুলায় দেশের টেকনিক্যাল থেকেও ভার্সিটিতে যেতে পারবে ডিগ্রিহোল্ডাররা।
৬টা বিভাগ ১২ বছরের এডুকেশন তদারক করবে। ভার্সিটিগুলোর প্রতিটা ডিসিপ্লিনের মাস্টারদের মধ্যে ইলেকশনের মাধ্যমে একটা কমিশন বানানো হবে। এই কমিশন ৬ বিভাগের এডুকেশন তদারক করবে, কারিকুলাম থেকে স্কুল-কলেজের মাস্টার রিক্রুটমেন্ট তদারক করবে এই কমিশন। এই কমিশনে মেডিকেল ভার্সিটি থেকেও ৫ জন মেম্বার থাকবে যারা মেডিকেলে ইলেকশনের মাধ্যমে আসবে।
চ. জজ রিক্রুট করবেন প্রেসিডেন্ট। ইমপিচমেন্টের এখতিয়ার থাকবে পার্লামেন্টের হাতে। ইমপিচমেন্টের জন্য পার্লামেন্টে মিনিমাম ৫১% ভোট লাগবে কিন্তু ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব তুলতে হবে পার্লামেন্টের অপোজিশনের অথবা ১৪ বছরের বেশি বয়সের অন্তত ১০ লাখ নাগরিকের পিটিশন দাখিল করতে হবে।
ছ. আদালতে শুনানি হবে খাঁটি বাংলায়, রায় দিতে হবে খাঁটি বাংলায়, তার বাইরে বাদী-বিবাদীর আবদার মোতাবেক আরও কোনো ভাষায় (উল্লেখযোগ্যভাবে চাকমা/মান্দি/ইংরেজি)। শুনানি হবে পাবলিক, রায় হবে পাবলিক, রায় নিয়ে পাবলিক আলোচনা করায় আপত্তি করবে না আদালত।
জ. হিউম্যান রাইটস কমিশনের নাম পাল্টে ইনসাফ কমিশন করা হবে। এই কমিশন তাবৎ মাকলুকাতের হক নিয়ে কাজ করবে। ইনসাফ কমিশন বানানো হবে ইলেকশনের মাধ্যমে। এতে ভোটার হবেন দেশের সকল আতেল-বয়াতি (ধর্মীয় মাহফিলে যারা বয়ান করেন, তাদেরকেও বয়াতি হিসেবে ধরা আছে)-লেখক-আর্টিস্ট-মুফতি। পেইন্টার-ফটোগ্রাফার ছাড়াও কামার-কুমার-নাপিত-শেফ, পূজার মূর্তি যারা বানান, এদেরও আর্টিস্ট ক্যাটাগরিতে রাখা আছে।
পুলিশ-গোয়েন্দা ইন্টারোগেশনের (রিমান্ডের) যে কোনো ঘটনায় ইনসাফ কমিশনের রিপ্রেজেন্টেটিভ হাজির থাকবে।
ইনসাফ কমিশনের হাতে বাশাবাড়ি/ফ্যাক্টরি ভিজিট করার এখতিয়ার থাকবে, তারা চাইল্ড লেবার এবং বাশাবাড়ির পার্মানেন্ট কাজের লোকদের সাথে কথা বলবেন যেখানে মালিকপক্ষ হাজির থাকবে না। দেশের সকল ফ্যামিলিতে বাচ্চাদের ওয়েলফেয়ারও তদারক করবেন তারা। দেশের এতিমখানা, রেসিডেন্সিয়াল স্কুল-মাদরাসা তদারকও করবেন।
এগুলো বাদে ইনসাফ কমিশন উকিলদের রেটিং বুক মেনটেইন করবে; সকল মামলার বাদী-বিবাদীর কাছ থেকে উকিলদের রেটিং নেবেন তারা। জজ রিক্রুটমেন্টের বেলায় প্রেসিডেন্ট ইনসাফ কমিশনের কাছে সুপারিশ চাইবেন। ইনসাফ কমিশন তখন রেটিং মোতাবেক টপ উকিলদের ইন্টারভিউ নেবেন। পোস্ট নম্বরের ১০ গুণ উকিলের ইন্টারভিউ নিয়ে পোস্ট নম্বরের ২ গুণ নাম সুপারিশ করবেন প্রেসিডেন্টের কাছে।
ইনসাফ কমিশনের এখতিয়ারে আরও থাকবে ফরেস্ট, ওয়াটার এবং এনভায়রনমেন্ট দপ্তর।
ইনসাফ কমিশনের ইলেক্টেড মেম্বারদের ইমপিচমেন্টের ক্ষমতা থাকবে পার্লামেন্টের হাতে এবং আদালতের একজন জজকে যেই তরিকায় ইমপিচ করা যায়, সেই তরিকায় এই কমিশনের ইলেক্টেড মেম্বারদের ইমপিচমেন্ট হতে পারবে।
এ বাদেও রাষ্ট্রের সকল পোস্টের লোকের ব্যাপারেই ফৌজদারি মামলা হতে পারবে। তবে প্রেসিডেন্ট বা উজিরে আজম এবং জজদের বেলায় নালিশ পেশ করতে হবে ইনসাফ কমিশনে, নালিশগুলো যাচাই করে মেরিট থাকলে ইনসাফ কমিশন মামলা আদালতে দাখিল করবে। আর ইনসাফ কমিশনের কোনো ইলেক্টেড মেম্বারের ব্যাপারে সকল নালিশ প্রেসিডেন্টের দপ্তরে পেশ করতে হবে; এমন নালিশগুলো প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টের অপোজিশনের ৭ জন এমপির একটা কমিটির কাছে পাঠাবেন; এই কমিটির সুপারিশ মোতাবেক আদালতে তেমন কোনো মামলা দায়ের হতে পারবে।
ঝ. ফেডারেল/ন্যাশনাল পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড থাকবে প্রেসিডেন্টের হাতে। করাপশন এবং আদালতের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকবে ন্যাশনাল পুলিশ। বর্ডার সিকিউরিটি বাদে বর্ডার গার্ডকে আর কোনো কাজে লাগানো যাবে না। মেয়র হিসেবে কেপিটালের পুলিশ মেয়রের হাতে থাকবে এবং পার্লামেন্টের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকবেন মেয়র।
ঞ. মিলিটারি থাকবে পার্লামেন্টের এখতিয়ারে। তবে মিলিটারির ৩ বাহিনীর হেড বাছাই করবেন প্রেসিডেন্ট। অন্য দেশের সাথে যুদ্ধ বাদে মিলিটারিকে দেশের ভিতরে কেবল ন্যাচারাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কাজে লাগানো যাবে। দেশের ভিতরে মিলিটারির কাজে আর্মস থাকবে না, ক্যান্টনমেন্টের বাইরে মিলিটারির আর্মস বের হবে না। তবে প্রেসিডেন্টের ডাইরেক্ট কমান্ডে ৫০০০ জনের একটা কমান্ডো বাহিনী থাকবে; দেশের ভিতর টেরোরিস্ট অ্যাটাক ইত্যাদিতে প্রেসিডেন্ট এই কমান্ডো বাহিনী ব্যবহার করবেন।
দেশে শান্তি বজায় রাখতে পারছে না সরকার, প্রেসিডেন্টের কাছে তেমন মনে হলে পার্লামেন্ট ভেঙে ৯০ দিনের ভিতর আগাম পার্লামেন্টারি ইলেকশন দিতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। পার্লামেন্ট ভাঙার সাথে সাথে উজিরে আজমের এক্সিকিউটিভ পাওয়ার চলে যাবে, নয়া সরকার গদিনশীন হবার আগে পর্যন্ত উজিরে আজম কেবল রুটিনওয়ার্ক করবেন।
ট. দেশের উন্নয়ন, ইকোনমি, পলিসি, ডিফেন্স দেখাভাল করবে পার্লামেন্ট তথা উজিরে আজমের নেতৃত্বে সরকার। পার্লামেন্টে বাজেট পেশ করবে সরকার, আলোচনা/ডিবেট হবে পার্লামেন্টে। ডিবেটের পরে বাজেটের খসড়া যাবে প্রেসিডেন্টের কাছে। প্রেসিডেন্ট আবার বিবেচনার জন্য, তার সুপারিশ যুক্ত করে বাজেটের খসড়া পার্লামেন্টে ২ বার ফেরত পাঠাতে পারবেন। তারপর সরকারের সাথে একমত হয়ে বাজেটে এজাজত দেবেন এবং পার্লামেন্ট তখন বাজেট পাশ করবে।
প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারে থাকা রাষ্ট্রের সকল খাদেমের বেতন ইত্যাদি বাদে সর্বোচ্চ ১০০০ কেজি সোনার দামের সমান টাকা বরাদ্দ চাইতে পারবেন তিনি। এই টাকা খরচ করার বেলায় ইনসাফ কমিশনের পরামর্শ নেবেন প্রেসিডেন্ট। খরচের ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের খায়েশগুলো ইনসাফ কমিশনের কাছে পাঠাবেন প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্টের খায়েশ কতটা র্যাশনাল-জাস্টিফায়েড, সেটা বিচার করে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেবে কমিশন।
উন্নয়ন বাজেটের বেশিরভাগ চলে যাবে লোকাল গভমেন্টের হাতে। সরকার ডাইরেক্ট তদারক করবে হাইওয়ে, ব্রিজ, ইন্টার-জেলা রাস্তা, নদী/পানি, আকাশ এবং রেল।
ভিন দেশ বা দেশি-বিদেশি কোনো কোম্পানির সাথে সরকার চুক্তি করতে চাইলে চুক্তির কপি অনলাইনে অ্যাক্সেসিবল রাখতে হবে, চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে আলাপের পরে ঐ চুক্তিতে দস্তখত করবে প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট নিজেও কোনো চুক্তি করতে চাইতে পারবে, তবে তাও আগে পাবলিক করতে হবে, পার্লামেন্টারি ডিবেটের মাধ্যমে এজাজত পেতে হবে পার্লামেন্টে।
পার্লামেন্টে কোনো বিল পাশ হতে ৫০%’র বেশি ভোট লাগবে। বাজেট এবং ‘সরকারে ভরসা (কনফিডেন্স)’ বিল বাদে এমপিরা তাদের দলের পজিশনের বিপরীতে ভোট দিতে বা ভোট দানে বিরত থাকতে পারবে।
ঠ. পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টের বিল প্রস্তাব করা যাবে। প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টের বিল পাশ হতে অন্তত ৬৬% ভোট লাগবে। তেমন কোনো বিল পার্লামেন্টে পাশ হলে ইলেকশন কমিশন ৪৫ দিনের ভিতর দেশে গণভোটের আয়োজন করবে; গণভোটে ৫০%’র বেশি ভোটার বিলের পক্ষে ভোট দিলে প্রেসিডেন্টের পদ খালি হবে।
প্রেসিডেন্টের বেলায় ইমপিচমেন্টের যেই কানুন, সেই তরিকাতেই মেয়র-কমিশনারদের ইমপিচমেন্ট হতে পারবে। মেয়র-কমিশনারদের বেলায় জেলা হাকিম ইলেকশনের ভোটারদের নিয়ে জেলা হাকিমের দপ্তরই লোকাল পার্লামেন্ট হিসেবে ধরা হবে। হাকিমদের ইমপিচমেন্টের এখতিয়ার থাকবে ন্যাশনাল পার্লামেন্টের হাতে, তেমন কোনো বিল পার্লামেন্টে পাশ হতে অন্তত ৬৬% ভোট লাগবে।
এ বাদে ফৌজদারি অপরাধে সাজা হলে রাষ্ট্রের যে কোনো পোস্ট অটোমেটিকভাবে খালি হবে। আপিল আদালতের রায়ে সাজা চুড়ান্ত হতে হবে। তবে, লোয়ার কোর্টে সাজা হলেই তার পদাধিকার মুলতবি হবে এবং আদালতের পরামর্শে ভারপ্রাপ্ত পদাধিকারি নির্ধারিত হবে।
ড. দেশের যে কোনো নাগরিক, কোম্পানি বা অর্গানাইজেশন দেশি বিদেশি ডোনেশন নিতে পারবে, তাতে সরকার বা প্রেসিডেন্ট বাধা দিতে পারবে না। দেশে দুইটি অডিট দপ্তর থাকবে, একটা প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারে, আরেকটা সরকারের এখতিয়ারে। প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের অডিট দপ্তর সরকারের হাতে থাকা দপ্তরগুলোর অডিট করবে, আর সরকারের এখতিয়ারের অডিট দপ্তর প্রেসিডেন্টের অধীন দপ্তরগুলোর অডিট করবে। দেশের সকল কোম্পানি বা অর্গানাইজেশনের পাওয়া ডোনেশনের অডিট করবে সরকারের হাতে থাকা অডিট দপ্তর। অডিটের যে কোনো ঘাপলায় অডিট দপ্তর বা সরকার বা প্রেসিডেন্ট ডাইরেক্ট কোনো অ্যাকশন নিতে পারবে না, অডিট দপ্তর ইনসাফ কমিশন এবং আইন মিনিস্ট্রিতে ঘাপলার বিস্তারিত পাঠাবে, আইন মিনিস্ট্রি সেই মোতাবেক আদালতে মামলা করবে। আইন মিনিস্ট্রি দফায় দফায় ইনসাফ কমিশনের দপ্তরে এই মামলাগুলোর ব্যাপারে জানিয়ে কমিশনকে অবহিত রাখবে; ইনসাফ কমিশনও যে কোনো মামলার ব্যাপারে আইন মিনিস্ট্রিতে জানতে চাইতে পারবে এবং এই মিনিস্ট্রি জানাতে বাধ্য থাকবে। তবে ইনসাফ কমিশনের অডিট রিপোর্ট এবং যে কোনো ঘাপলা প্রেসিডেন্টের দপ্তরে যাবে।
রাষ্ট্র বাদী হয়ে যেই সব মামলা করবে, সেগুলো পাবলিক প্রসিকিউটর/উকিল চালাবে আদালতে। এই পাবলিক প্রসিকিউটরদের নিয়োগ দেবে ইনসাফ কমিশন এবং জজ নিয়োগের ফর্মুলায় এই নিয়োগ হবে। পাবলিক প্রসিকিউটরদের ইমপিচমেন্টের বিল উঠতে পারবে পার্লামেন্টে এবং ৫%’র বেশি এমপির ভোটে বিল পাশ হবে এবং পাবলিক উকিলের পোস্ট খালি হবে; তবে শর্ত থাকে যে, পার্লামেন্টে পাশ হলেও পাবলিক উকিলদের ইমপিচমেন্টের বিলে প্রেসিডেন্ট ভেটো দিতে পারবে।
পাবলিক যে কোনো মামলায় জনতা/রাষ্ট্রের পক্ষে ভলান্টিয়ার উকিল থাকতে পারবে; কোনো অর্গানাইজেশন বা ব্যক্তিগতভাবেও কোনো উকিল যে কোনো পাবলিক মামলায় জনতার পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে পারবে। পাবলিক উকিল মামলার দলিলপত্র দিয়ে তেমন ভলান্টিয়ার উকিলদের মদদ দেবেন।
ঢ. ইনসাফ কমিশনের অধীনে সোশ্যাল জাস্টিস দপ্তর দেশের সকল মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডা ইত্যাদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেখাভাল করবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে মেম্বার/মুসল্লিদের মধ্যে ইলেকশনের মাধ্যমে কমিটি বানাবে এই দপ্তর। একইভাবে স্কুল-মাদ্রাসার পোলাপাইয়াদের গার্জেনদের মধ্যে ইলেকশন করেও কমিটি বানাবে এই দপ্তর। এই কমিটিগুলি হবে ২ বছর মেয়াদি।
সোশ্যাল জাস্টিস দপ্তর মসজিদগুলো সকলের জন্য খুলে রাখার জন্য মসজিদ কমিটিকে উৎসাহিত করবে, মসজিদে মুসাফিররা রাতে ঘুমাবে, মসজিদের টয়লেট-বাথরুম পাবলিক করে তোলা হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বাদেও মসজিদ খোলা থাকার সুযোগে সোশ্যাল জাস্টিস দপ্তর মসজিদগুলো সকলের জন্য খুলে রাখার জন্য মসজিদ কমিটিকে উৎসাহিত করবে, মসজিদে মুসাফিররা রাতে ঘুমাবে, মসজিদের টয়লেট-বাথরুম পাবলিক করে তোলা হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বাদেও মসজিদ খোলা থাকার সুযোগে চুরি হলে এই দপ্তর চুরির ক্ষতিপূরণ করবে। এছাড়াও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষার আয়োজন রাখবে এই দপ্তর।
এই দপ্তরের জন্য বাজেটে দরকারি বরাদ্দ থাকবে। তা বাদেও দেশের সকল চর ইত্যাদি খাস জমি এই দপ্তরের জিম্মায় থাকবে। যাদের বাড়িঘর নাই, হোমলেস, তাদেরকে বাজারদরের ৫ ভাগের ১ ভাগ দামে লম্বা-মেয়াদি কিস্তিতে ঐ জমি দেবে এই দপ্তর।
দেশের সকল মহকুমায় সরাইখানা চালাবে এই দপ্তর; এই সরাইখানায় খাবারদাবারের জন্য সিএসআর (CSR) থেকে টাকা আসবে দপ্তরে এবং ফার্মারদের থেকে ডাইরেক্ট মাছ-সবজি-চাল-ডাল কিনবে দপ্তর। এই সরাইখানা ওল্ডহোম হিসেবেও কাজ করবে।
//জুলাই২৯-২আগস্ট২০২৪
রাজনৈতিক মনজিল ২০৪১
আমাদের একমত হওয়া দরকার জে, রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশ বহু জাতির একটা কনফেডারেশন। একই শাথে ‘বাংলাদেশি’ নামে ছেরেফ টেরিটোরিয়াল অর্থের জেনারেল ‘জাতি’ আছে জেইটা ‘নেশনাল পার্লামেন্ট’, ‘নেশনাল ইলেকশন’, ‘নেশনাল আর্কাইভ’, ‘পাছপোর্ট’ ইত্তাদি শব্দে পাই এবং বুঝতে পারি আরামেই। এই জেনারেল জাতির আইডিয়া এবং ‘বাংগালি’, ‘মোছলমান বাংগালি’, ‘হিন্দু বাংগালি’, ‘চাকমা’, ‘মান্দি’, ‘শাওতাল’, ‘টিপরা’, ‘রাখাইন’ ইত্তাদি জাতির আইডিয়া এবং এগুলির ভিন্ন ভিন্ন কালচারাল চর্চার কোন বিরোধ-ঝগড়া-ফ্যাছাদ নাই; বরং একটা আরেকটারে পুরা করে, টেরিটোরিয়াল অর্থের জেনারেল জাতি দেশের শকল জাতির শান্তিচুক্তির ভিতর দিয়া একটা একক ইকোনমিক এনটিটি পয়দা করতেছে। জেমন ঘটে একটা কোম্পানির বেলায়: কয়েকজন বেক্তি মিলে একটা কোম্পানি বানায়, জেইটা ঐ বেক্তিদের লিগাল হক এবং দায়িত্তঅলা, ঐ বেক্তিদের শমান আরেকটা এনটিটি–একটা ইকোনোমিক ইউনিট, জার লগে ঐ বেক্তিদের কোন বিরোধ নাই, বরং উল্টা, ঐ কোম্পানির ভিতর দিয়া ঐ বেক্তিদের ইউনিটি বা একতার শক্তি মালুম হইতে পারে।
একটা শুখি বাংলাদেশ গড়তে আমাদের একটা শান্তির বাংলাদেশ বানাইতে হবে শুরুতে। এবং শান্তির শর্ত হইলো ইনছাফ; বহু জাতি, মত, পথ, ধর্ম, দর্শনের ভিতর একটা শান্তিচুক্তি না হইলে শান্তি কায়েম হবে না দেশে, ফলে ইনছাফের শম্ভাবনা পয়দা হইতে পারবে না, ফলে শুখি বাংলাদেশ পাওয়াও অশম্ভব থাইকা জাবে।
ঐ শান্তিচুক্তিরই আরেকটা নাম ডেমোক্রেটিক রেভলুশন। অন্ন জে কোন কিছিমের রেভলুশন শক্তিমানের শাশন কায়েম করে; শেই শক্তিমান বহু ছুরতে হাজির হইতে পারে: এখনকার বাকশালি তালুকদারি-মাফিয়া শাশন তারই একটা, আরো কয়েকটা ছুরত হইতে পারে বাংগালি নেশনালিজম, মোছলমান বাংগালি, হিন্দু বাংগালি, মার্ক্সের তরিকার গাহেক। ডেমোক্রেটিক রেভলুশন মানে ঐ শব শক্তিমানের শাশনের বদলে একটা শান্তিচুক্তির ভিতর দিয়া শকলের, জনতার শকল ভাগের শরিকির ভিতর দিয়া ইনছাফ কায়েম করা।
এমন একটা ডেমোক্রেটিক রেভলুশন বহাল তবিয়ত রাখতে এবং শেই রাস্তায় হাটতে হাটতে ইতিহাশের কোন একটা জামানায় শুখি বাংলাদেশ গড়তে ইতিহাশের এই মোমেন্টে অন্তত ৩টা পয়েন্টে আমাদের একমত হওয়া দরকার, এবং একটা আপদকালিন চুক্তি কইরা ওয়াদা রাখার কছম খাইতে হবে আমাদের। ৩টা পয়েন্ট এমন:
ক. ইলেকশন এবং একমাত্র ইলেকশনের ভিতর দিয়া খমতার হাতবদল।
খ. বেক্তি মালিকানা। এই বেক্তি মালিকানার অর্থ এমন না জে, ছেরেফ ৫% দেশের শব কিছুর মালিক হবে, বাকি ৯৫% নাগরিক কোনকিছুর মালিক থাকবে না; বরং এই বেক্তি মালিকানার অর্থ হইলো, ১০০% নাগরিকই মালিক হবে। বাংলাদেশের মোট জমিনকে ২০ কোটি ভাগ করলে পেরায় ৮০০ এস্কয়ার মিটার জমি পড়ে পোরতিটা ভাগে; তাই শকল নাগরিকের পার হেড অন্তত ২০ শতক জমি থাকা খুবই শম্ভব।
গ. মুক্ত বিবেক। নাগরিকদের বিবেকের চারপাশে রাশ্টো কোন বাউন্ডারি দিতে পারবে না, মানুশের চিন্তা এবং কথা কোন ছার্কেলের ভিতর থাকার ব্যাপার না। রাশ্টের শকল কর্মি, ইলেকটেড ডেলিগেট, শরকার আদতে জনতার খাদেম, এই খাদেমদের কায়কারবার তদারক করার হক আছে জনতার বা নাগরিকদের; নাগরিকদের বিবেক মুক্ত না থাকলে ঐ তদারকি অশম্ভব, রাশ্টের জে কোন ব্যাপারে কথা কইতে পারবে নাগরিকরা, এইটা নাগরিকদের হক এবং দায়িত্ত। খোদ রাশ্টোই বানাইছে নাগরিকদের বিবেক, তাই নাগরিকদের বিবেক বন্দি করতে পারে না রাশ্টো।
শুখ শান্তি পাট্টির ইশতেহার
[ আমি রকম শা ওরফে রক মনু ওরফে এস এম রেজাউল করিম বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক রেভলুশনের পরে একটা পলিটিকেল পাট্টি বানাইতে চাই। এখন রাজনিতির উপর বাস্তবে ব্যান চলতেছে; গত কয় বছরে দুয়েকটা পাট্টি পয়দা হইতে দেশে, ঐগুলারে দখলদার বাতিল গভমেন্ট হইতে দেবার কারন হইলো, জাতে অলরেডি জনতার ভিতর জেই পাট্টির মস্ত বুনিয়াদ আছে, শেই বিএনপিরে দুর্বল করা। তাই ঐ নয়া পাট্টিগুলা বাকশালি দখলদারের এজেন্ডা মোতাবেক ‘কিংস পাট্টি’র পাটে অভিনয় করতেছে মাত্র।
এখন ডেমোক্রেটিক রেভলুশনের তরে বাংলাদেশের জনতারে উপরে লেখা ৩ দফায় চুক্তি করার দাওয়াত দিতেছি আমি। এর লগে আগামিতে আমি জেই পলিটিকেল পাট্টি গড়তে চাই, তার ইশতেহারের খশড়া পেশ করতেছি জনতার দরবারে। এই ইশতেহারের মর্মের লগে জারা একমত হবেন, তেমন লোকদের নিয়া আলাপ আলোচনার ভিতর দিয়া ঘশামাজা কইরা এই ইশতেহার ফাইনাল করা জাবে। তবে জে কোন ইশতেহার, এমনকি দেশের কন্সটিটুশনও খশড়া হিশাবে ভাবাই ভালো; কেননা, নয়া জামানা হাজির হয়, নয়া মানুশ-নাগরিক হাজির হয় কালে, তাই কোন এক জামানায় বানানো মানুশের জে কোন ডকুমেন্ট আপডেট করার দরকার পড়ে। কেননা, মানুশের তরেই এই শকল ডকুমেন্ট, এমনকি রাশ্টো, ডকুমেন্টের তরে মানুশ-নাগরিক না। ]
কবুলিয়তের শাশন
শাশনের বুনিয়াদ হইতে হবে জনতার কবুলিয়ত। জনতা কবুল করে নাই, তেমন কেউ শাশনের কোন পোস্টে থাকতে পারবে না। জেই শাশক জনতার বায়াত [ভোট] না পাবে, শে শাশক হইতে পারবে না এবং জনতা জে কোন শময় তাদের ভোট তুইলা নিতে পারবে। শাশকের জে কোন পোস্টের জে কাউকে নামানোর খমতা থাকতে হবে জনতার হাতে।
জনতার এই পাওয়ার কোন শাশক জেন মুলতবি করতে না পারে, শেই ছিস্টেম বানাইতে হবে এবং শেইটা বানাইতে হইলে রাশ্টের মুছাবিদা থিকা শাশনের পুরা ছিস্টেম নতুন কইরা বানাইতে হবে। নতুন ছিস্টেমের নকশার মুছাবিদা পেশ করলাম আমরা:
ক. রাশ্টের একদম উপরে দুইটা পোস্ট থাকবে, পেছিডেন এবং উজিরে আজম। পেছিডেন হবেন শারা দেশের ভোটারদের ডাইরেক ভোটে। উজিরে আজম হইবেন ৩০০ এমপির ভোটে, জেই এমপিরা ইলেকটেড হইবেন জনতার ডাইরেক ভোটে।
দেশের দপ্তরগুলা পেছিডেন এবং উজিরে আজমের হাতে ভাগাভাগি কইরা দেওয়া হবে। পেছিডেন এবং পার্লামেন্ট ইলেকশন একই দিনে হবে, দুইটা ব্যালট নিয়া ভোটের বুথে ঢুকবেন ভোটাররা।
খ. শকল শহরে ১ জন ইলেকটেড মেয়র থাকবে। এবং পোরতি ১০০০ ভোটারের বিপরিতে ১ জন কমিশনার ইলেকটেড হবেন। শহরের পুলিশ থাকবে মেয়রের হাতে, শহরবাশির খাজনার পয়শায় মেয়র এবং পুলিশ বা শহরের শকল পাবলিক খাদেমের বেতন দেওয়া হবে। পোরতি ১০০০ ভোটারের বিপরিতে ১ জন পুলিশ থাকবে।
একটা উপজেলায় ১টা শহর এবং মেয়র থাকবে, উপজেলার বাকি এলাকা ইউনিয়নে ভাগ করা থাকবে। ইউনিয়নগুলায় ইলেকশনের ভিতর দিয়া ১ জন মেয়র এবং পোরতি ১০০০ ভোটারের বিপরিতে ১ জন কমিশনার ইলেকটেড হবে।
পোরতি মহকুমায় একজন ইলেকটেড শরিফ হবেন। এই শরিফ হবেন ১ জন মেয়ে। তার দপ্তর হবে উপজেলার ছেন্টারে। তিনি মহকুমার শালিশি করবেন এবং দেশের জমিজমার শকল হাতবদল/রেজিস্টির কাম মহকুমার দপ্তরে চইলা জাবে। তার হাতে থাকবে উপজেলা পুলিশ, পোরতি ১ হাজার ভোটারের বিপরিতে ১ জন পুলিশ থাকবেন শরিফের দপ্তরে। পোলা এবং মাইয়া ভোটারের অনুপাতে পুলিশ থাকবে। তার বাইরে ১ জন হিজড়া পুলিশ থাকবে। উপজেলায় হিজড়া পাওয়া না গেলে পোস্ট খালি থাকবে।
দেশে ৬৪ জেলা থাকবে, জেলাগুলা ৫টা মহকুমায় ভাগ করা থাকবে। ৫ মহকুমার শকল মেয়র, শরিফ, কমিশনারের ১টা কইরা ভোট থাকবে, শেই ভোটে জেলায় ১ জন হাকিম ইলেকটেড হবেন। হাকিমের দপ্তর থাকবে জেলার ছেন্টারে। জেলা-মহকুমার ৪টা কোনা থিকা কোনাকুনি ২টা লাইন টানলে শেই লাইন দুইটা জেই বিন্দুতে ছেদ করবে, শেই বিন্দুটাই হবে জেলা-মহকুমার ছেন্টার। হাকিমের দপ্তরে শালিশি-ছিস্টেমে জেলার নাগরিকদের ফ্যাছাদের ফয়ছালা হবে। এই ফয়ছালার ব্যাপারে জেলা আদালতে আপিল করা জাবে। হাকিমের হাতে ৫ জন পুলিশ থাকবে, শেই পুলিশের কাছে ছেরেফ হাতকড়া এবং ইলেকট্রিক শকার থাকবে।
জেলার মহকুমা, ছিটি, ইউনিয়নের কামাই হবে নাগরিকদের খাজনা, জমির হাতবদলের ফিশের ৫০%, টেরেড লাইছেন্স এবং গাড়িঘোড়ার লাইছেন্স ফিশ থিকা।
গ. পোরতি জেলায় একটা আদালত থাকবে। এই আদালত হবে হাকিমের দপ্তরের পাশে। ছেন্টারে আরো থাকবে জেলা কারাগার। আদালত এবং কারাগারের ছিকিউরিটির দায়িত্ব থাকবে ফেডারেল পুলিশের হাতে। জেলায় ফেডারেল পুলিশের আর কোন এখতিয়ার থাকবে না।
আদালতে জজ থাকবেন ১ জন এবং ৭ জন জুরি থাকবেন। এই জুরি বোর্ড বানাবার এখতিয়ার থাকবে হাকিমের হাতে। মামলার আশামির আবদারের বুনিয়াদে জুরি বোর্ড থাকা বা না থাকা ভর করবে–আশামি চাইলে হাকিম জুরি বোর্ড বানাইয়া দেবেন, না চাইলে থাকবে না।
ঘ. পাবলিক হাশপাতালগুলা মেডিকেল কলেজগুলার আওতায় ভাগ করা হবে। পাবলিক ভার্ছিটিগুলার ফার্মাছি ডিপার্টমেন্ট মেডিকেল কলেজ/ভার্ছিটির আওতায় চলে জাবে জেনারেল ভার্ছিটিতে থাকবে জেনেটিক্স এবং বায়োকেমিস্ট্রি। মেডিকেল কলেজ/ভার্ছিটির ডাক্তার আর ফার্মাছিস্টদের ভিতর ইলেকশনের ভিতর দিয়া ১১ জনের দুইটা কমিশন বানানো হবে। এই দুই কমিশনের হাতে এখতিয়ার থাকবে ফার্মা কোম্পানি এবং পেরাইভেট হাশপাতালগুলা দেখভাল করার।
ঙ. পাবলিক কলেজে ব্যাচেলর পোগ্রাম থাকবে না। ইন্টারমিডিয়েটের পরে পেশাদারি ডিপ্লোমা দিতে পারবে তারা, ১ বছরের ডিপ্লোমা হবে শেইটা; এই ডিপ্লোমার কোর্ছ ভার্ছিটিগুলার ডিছিপ্লিনের লগে খাপ খাবে, এই ডিপ্লোমাহোল্ডাররা ভার্ছিটির ব্যাচেলরে ১ বছর পার করছে বইলা ধরা হবে। একই ফর্মুলায় দেশের টেকনিক্যাল থিকাও ভার্ছিটিতে জাইতে পারবে ডিগ্রিহোল্ডাররা।
৬টা বিভাগ ১২ বছরের এডুকেশন তদারক করবে। ভার্ছিটিগুলার পোরতিটা ডিছিপ্লিনের মাশ্টারদের ভিতর ইলেকশনের ভিতর দিয়া একটা কমিশন বানানো হবে। এই কমিশন ৬ বিভাগের এডুকেশন তদারক করবে, কারিকুলাম থিকা ইশকুল-কলেজের মাশ্টার রিক্রুটমেন্ট তদারক করবে এই কমিশন। এই কমিশনে মেডিকেল ভার্ছিটি থিকাও ৫ জন মেম্বার থাকবে জারা মেডিকেলে ইলেকশনের ভিতর দিয়া আশবে।
চ. জজ রিক্রুট করবেন পেছিডেন। ইমপিচমেন্টের এখতিয়ার থাকবে পার্লামেন্টের হাতে। ইমপিচমেন্টের জন্ন পার্লামেন্টে মিনিমাম ৫১% ভোট লাগবে কিন্তু ইমপিচমেন্টের পোস্তাব তুলতে হবে পার্লামেন্টের অপোজিশনের অথবা ১৪ বছরের বেশি বয়শের অন্তত ১০ লাখ নাগরিকের পিটিশন দাখিল করতে হবে।
ছ. আদালতে শুনানি হবে খাশ বাংলায়, রায় দিতে হবে খাশ বাংলায়, তার বাইরে বাদি-বিবাদির আবদার মোতাবেক আরো কোন ভাশায় (নোটেবলি চাকমা/মান্দি/ইংরাজি)। শুনানি হবে পাবলিক, রায় হবে পাবলিক, রায় নিয়ে পাবলিক আলোচনা করায় আপত্তি করবে না আদালত।
জ. হিউম্যান রাইটস কমিশনের নাম পাল্টে ইনছাফ কমিশন করা হবে। এই কমিশন তাবত মাকলুকাতের হক নিয়া কাম করবে। ইনছাফ কমিশন বানানো হবে ইলেকশনের ভিতর দিয়া। এতে ভোটার হবেন দেশের শকল আতেল-বয়াতি (ধর্মিয় মাফিলে জারা বয়ান করেন, তাদেরকেও বয়াতি হিশাবে ধরা আছে)-লেখক-আর্টিশ-মুফতি। পেইন্টার-ফটোগেরাফার ইত্তাদি বাদেও কামার-কুমার-নাপিত-শেফ, পুজার মুর্তি জারা বানান, এনাদেরো আর্টিশ ক্যাটেগরিতে রাখা আছে।
পুলিশ-গোয়েন্দা ইন্টারোগেশনের (রিমান্ডের) জে কোন ঘটনায় ইনছাফ কমিশনের রিপ্রেজেন্টেটিভ হাজির থাকবে।
ইনছাফ কমিশনের হাতে বাশাবাড়ি/ফ্যাক্টরি ভিজিট করার এখতিয়ার থাকবে, তারা চাইল্ড লেবার এবং বাশাবাড়ির পার্মানেন্ট কাজের লোকদের লগে কথা কইবেন জেইখানে মালিকপক্ষ হাজির থাকবে না। দেশের শকল ফেমিলিতে বাচ্চাদের ওয়েলফেয়ারও তদারক করবেন তারা। দেশের এতিমখানা, রেছিডেন্সিয়াল ইশকুল-মাদরাশা তদারকও করবেন।
এগুলি বাদে ইনছাফ কমিশন উকিলদের রেটিং বুক মেনটেইন করবে; শকল মামলার বাদি-বিবাদির কাছ থেকে উকিলদের রেটিং নেবেন তারা। জজ রিক্রুটমেন্টের বেলায় পেছিডেন ইনছাফ কমিশনের কাছে শুপারিশ চাইবেন। ইনছাফ কমিশন তখন রেটিং মোতাবেক টপ উকিলদের ইন্টারভিউ নেবেন। পোস্ট নাম্বারের ১০ গুন উকিলের ইন্টারভিউ লইয়া পোস্ট নাম্বারের ২ গুন নাম শুপারিশ করবেন পেছিডেনের কাছে।
ইনছাফ কমিশনের এখতিয়ারে আরো থাকবে ফরেস্ট, ওয়াটার এবং এনভায়রনমেন্ট দপ্তর।
ইনছাফ কমিশনের ইলেকটেড মেম্বারদের ইমপিচমেন্টের খমতা থাকবে পার্লামেন্টের হাতে এবং আদালতের একজন জজকে জেই তরিকায় ইমপিচ করা জায়, শেই তরিকায় এই কমিশনের ইলেকটেড মেম্বারদের ইমপিচমেন্ট হইতে পারবে।
এ বাদেও রাশ্টের শকল পোস্টের লোকের ব্যাপারেই ফৌজদারি মামলা হইতে পারবে। তবে পেছিডেন বা উজিরে আজম এবং জজদের বেলায় নালিশ পেশ করতে হবে ইনছাফ কমিশনে, নালিশগুলা জাচাই কইরা মেরিট থাকলে ইনছাফ কমিশন মামলা আদালতে দাখিল করবে। আর ইনছাফ কমিশনের কোন ইলেকটেড মেম্বারের ব্যাপারে শকল নালিশ পেছিডেনের দপ্তরে পেশ করতে হবে; এমন নালিশগুলা পেছিডেন পার্লামেন্টের অপোজিশনের ৭ জন এমপির একটা কমিটির কাছে পাঠাবেন; এই কমিটির শুপারিশ মোতাবেক আদালতে তেমন কোন মামলা দায়ের হইতে পারবে।
ঝ. ফেডারেল/নেশনাল পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড থাকবে পেছিডেনের হাতে। করাপশন এবং আদালতের ছিকিউরিটির দায়িত্তে থাকবে নেশনাল পুলিশ। বর্ডার ছিকিউরিটি বাদে বর্ডার গার্ডকে আর কোন কামে লাগানো জাবে না। মেয়র হিশাবে কেপিটালের পুলিশ মেয়রের হাতে থাকবে এবং পার্লামেন্টের ছিকিউরিটির দায়িত্তে থাকবেন মেয়র।
ঞ. মিলিটারি থাকবে পার্লামেন্টের এখতিয়ারে। তবে মিলিটারির ৩ বাহিনির হেড বাছাই করবেন পেছিডেন। অন্ন দেশের লগে জুদ্ধ বাদে মিলিটারিকে দেশের ভিতরে কেবল নেচারাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কামে লাগানো জাবে। দেশের ভিতরে মিলিটারির কামে আর্মস থাকবে না, ক্যান্টনমেন্টের বাইরে মিলিটারির আর্মস বের হবে না। তবে পেছিডেনের ডাইরেক কমান্ডে ৫০০০ জনের একটা কমান্ডো বাহিনি থাকবে; দেশের ভিতর টেররিস্ট এটাক ইত্তাদিতে পেছিডেন এই কমান্ডো বাহিনি এস্তেমাল করবেন।
দেশে শান্তি বজায় রাখতে পারতেছে না শরকার, পেছিডেনের কাছে তেমন মনে হইলে পার্লামেন্ট ভাইংগা ৯০ দিনের ভিতর আগাম পার্লামেন্টারি ইলেকশন দিতে পারবেন পেছিডেন। পার্লামেন্ট ভাংগার লগে লগে উজিরে আজমের এক্সিকিউটিভ পাওয়ার চইলা জাবে, নয়া শরকার গদিনশিন হবার আগে তক উজিরে আজম কেবল রুটিনওয়ার্ক করবেন।
ট. দেশের উন্নয়ন, ইকোনমি, পলিছি, ডিফেন্স দেখভাল করবে পার্লামেন্ট তথা উজিরে আজমের নেতামিতে শরকার। পার্লামেন্টে বাজেট পেশ করবে শরকার, আলোচনা/ডিবেট হবে পার্লামেন্টে। ডিবেটের পরে বাজেটের খশড়া জাবে পেছিডেনের কাছে। পেছিডেন আবার বিবেচনার জন্ন, তার শুপারিশ জুক্ত কইরা বাজেটের খশড়া পার্লামেন্টে ২ বার ফেরত পাঠাইতে পারবেন। তারপর শরকারের লগে একমত হইয়া বাজেটে এজাজত দেবেন এবং পার্লামেন্ট তখন বাজেট পাশ করবে।
পেছিডেনের এখতিয়ারে থাকা রাশ্টের শকল খাদেমের বেতনাদি বাদে শর্বোচ্চ ১০০০ কেজি শোনার দামের শমান টাকা বরাদ্দ চাইতে পারবেন তিনি। এই টাকা খরচ করার বেলায় ইনছাফ কমিশনের পরামিশ লইবেন পেছিডেন। খরচের ব্যাপারে পেছিডেনের খায়েশগুলা ইনছাফ কমিশনের কাছে পাঠাইবেন পেছিডেন, পেছিডেনের খায়েশ কতোটা রেশনাল-জাস্টিফাইড, শেইটা বিচার কইরা পেছিডেনকে পরামিশ দেবে কমিশন।
উন্নয়ন বাজেটের বেশিরভাগ চইলা জাবে লোকাল গভমেন্টের হাতে। শরকার ডাইরেক তদারক করবে হাইওয়ে, বিরিজ, ইন্টার-জেলা রাস্তা, নদি/পানি, আকাশ এবং রেল।
ভিন দেশ বা দেশি-বিদেশি কোন কোম্পানির লগে শরকার চুক্তি করতে চাইলে চুক্তির কপি অনলাইনে একছেছিবল রাখতে হবে, চুক্তি লইয়া পার্লামেন্টে আলাপের পরে ঐ চুক্তিতে দস্তখত করবে পেছিডেন। পেছিডেন নিজেও কোন চুক্তি করতে চাইতে পারবে, তবে তাও আগে পাবলিক করতে হবে, পার্লামেন্টারি ডিবেটের ভিতর দিয়া এজাজত পাইতে হবে পার্লামেন্টে।
পার্লামেন্টে কোন বিল পাশ হইতে ৫০%’র বেশি ভোট লাগবে। বাজেট এবং ‘শরকারে ভরশা (কনফিডেন্স)’ বিল বাদে এমপিরা তাদের দলের পজিশনের বিপরিতে ভোট দিতে বা ভোট দানে বিরত থাকতে পারবে।
ঠ. পার্লামেন্টে পেছিডেনের ইমপিচমেন্টের বিল পোস্তাব করা জাবে। পেছিডেনের ইমপিচমেন্টের বিল পাশ হইতে অন্তত ৬৬% ভোট লাগবে। তেমন কোন বিল পার্লামেন্টে পাশ হইলে ইলেকশন কমিশন ৪৫ দিনের ভিতর দেশে গনভোটের আয়োজন করবে; গনভোটে ৫০%’র বেশি ভোটার বিলের পক্ষে ভোট দিলে পেছিডেনের পদ খালি হবে।
পেছিডেনের বেলায় ইমপিচমেন্টের জেই কানুন, শেই তরিকাতেই মেয়র-কমিশনারদের ইমপিচমেন্ট হইতে পারবে। মেয়র-কমিশনারদের বেলায় জেলা হাকিম ইলেকশনের ভোটারদের নিয়ে জেলা হাকিমের দপ্তরই লোকাল পার্লামেন্ট হিশাবে ধরা হবে। হাকিমদের ইমপিচমেন্টের এখতিয়ার থাকবে নেশনাল পার্লামেন্টের হাতে, তেমন কোন বিল পার্লামেন্টে পাশ হইতে অন্তত ৬৬% ভোট লাগবে।
এ বাদে ফৌজদারি কেরাইমে শাজা হইলে রাশ্টের জে কোন পোস্ট অটোমেটিকেলি খালি হবে। আপিল আদালতের রায়ে শাজা চুড়ান্ত হতে হবে। তবে, লোয়ার কোর্টে শাজা হইলেই তার পদাধিকার মুলতবি হবে এবং আদালতের পরামর্শে খালি পদ পুরন করা হবে।
ড. দেশের জে কোন নাগরিক, কোম্পানি বা অর্গানাইজেশন দেশি বিদেশি ডোনেশন লইতে পারবে, তাতে শরকার বা পেছিডেন বাধা দিতে পারবে না। দেশে দুইটা অডিট দপ্তর থাকবে, একটা পেছিডেনের এখতিয়ারে, আরেকটা শরকারের এখতিয়ারে। পেছিডেনের এখতিয়ারের অডিট দপ্তর শরকারের হাতে থাকা দপ্তরগুলার অডিট করবে, আর শরকারের এখতিয়ারের অডিট দপ্তর পেছিডেনের অধিন দপ্তরগুলার অডিট করবে। দেশের শকল কোম্পানি বা অর্গানাইজেশনের পাওয়া ডোনেশনের অডিট করবে শরকারের হাতে থাকা অডিট দপ্তর। অডিটের জে কোন ঘাপলায় অডিট দপ্তর বা শরকার বা পেছিডেন ডাইরেক কোন একশন নিতে পারবে না, অডিট দপ্তর ইনছাফ কমিশন এবং আইন মিনিস্ট্রিতে ঘাপলার বিস্তারিত পাঠাবে, আইন মিনিস্ট্রি শেই মোতাবেক আদালতে মামলা করবে। আইন মিনিস্ট্রি দফায় দফায় ইনছাফ কমিশনের দপ্তরে এই মামলাগুলার ব্যাপারে জানাইয়া কমিশনকে উকিবহাল রাখবে; ইনছাফ কমিশনও জে কোন মামলার ব্যাপারে আইন মিনিস্ট্রিতে জানতে চাইতে পারবে এবং এই মিনিস্ট্রি জানাইতে বাদ্ধ থাকবে। তবে ইনছাফ কমিশনের অডিট রিপোর্ট এবং জে কোন ঘাপলা পেছিডেনের দপ্তরে জাবে।
রাশ্টো বাদি হইয়া জেই শব মামলা করবে, শেগুলা পাবলিক পোছিকিউটর/উকিল চালাবে আদালতে। এই পাবলিক পোছিকিউটরদের নিয়োগ দেবে ইনছাফ কমিশন এবং জজ নিয়োগের ফর্মুলায় এই নিয়োগ হবে। পাবলিক পোছিকিউটরদের ইমপিচমেন্টের বিল উঠতে পারবে পার্লামেন্টে এবং ৫%’র বেশি এমপির ভোটে বিল পাশ হবে এবং পাবলিক উকিলের পোস্ট খালি হবে; তবে শর্ত থাকে জে, পার্লামেন্টে পাশ হইলেও পাবলিক উকিলদের ইমপিচমেন্টের বিলে পেছিডেন ভেটো দিতে পারবে।
পাবলিক জে কোন মামলায় জনতা/রাশ্টের পক্ষে ভলান্টিয়ার উকিল থাকতে পারবে; কোন অর্গানাইজেশন বা বেক্তিগতভাবেও কোন উকিল জে কোন পাবলিক মামলায় জনতার পক্ষে আদালতে খাড়াইতে পারবে। পাবলিক উকিল মামলার দলিলপত্র দিয়া তেমন ভলান্টিয়ার উকিলদের মদদ দেবেন।
ঢ. ইনছাফ কমিশনের অধিনে ছোশাল জাস্টিছ দপ্তর দেশের শকল মশজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডা ইত্তাদি ধর্মিয় পোতিশ্ঠান দেখভাল করবে। এই পোতিশ্ঠানগুলিতে মেম্বার/মুছুল্লিদের ভিতর ইলেকশনের ভিতর দিয়া কমিটি বানাবে এই দপ্তর। একইভাবে ইশকুল-মাদরাশার পোলামাইয়াদের গার্জেনদের ভিতর ইলেকশন কইরাও কমিটি বানাবে এই দপ্তর। এই কমিটিগুলি হবে ২ বছর মেয়াদি।
ছোশাল জাস্টিছ দপ্তর মশজিদগুলা শকলের জন্ন খুলে রাখার জন্ন মশজিদ কমিটিকে ফুশলাবে, মশজিদে মুছাফিররা রাতে ঘুমাবে, মশজিদের টয়লেট-বাথরুম পাবলিক কইরা তোলা হবে। ধর্মিয় পোতিশ্ঠনের উন্নয়ন বাদেও মশজিদ খোলা থাকার মওকায় চুরি হইলে এই দপ্তর চুরির খতি পুরন করবে। এছাড়াও ধর্মিয় পোতিশ্ঠানে ধর্ম শিক্ষার আয়োজন রাখবে এই দপ্তর।
এই দপ্তরের জন্ন বাজেটে দরকারি বরাদ্দ থাকবে। তা বাদেও দেশের শকল চর ইত্তাদি খাশ জমি এই দপ্তরের জিম্মায় থাকবে। জাদের বাড়িঘর নাই, হোমলেছ, তাদেরকে বাজারদরের ৫ ভাগের ১ ভাগ দামে লম্বা-মেয়াদি কিস্তিতে ঐ জমি দেবে এই দপ্তর।
দেশের শকল মহকুমায় শরাইখানা চালাবে এই দপ্তর; এই শরাইখানায় খাবারদাবারের জন্ন ছিএছআর (CSR) থেকে টাকা আশবে দপ্তরে এবং ফার্মারদের থেকে ডাইরেক মাছ-শবজি-চাল-ডাল কিনবে দপ্তর। এই শরাইখানা ওল্ডহোম হিশাবেও কাম করবে।
//জুলাই২৯-২আগস্ট২০২৪

comment/ফতোয়া